প্রকাশিত: ৯:১১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৭, ২০২২
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
প্রলয়ঙ্করী আম্পানের ক্ষত এখনও বয়ে চলেছে বৈঁচিতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় । সেমিপাঁকা ভবনটির ছয়টি কক্ষের টিন উড়ে গিয়েছিল ওই ঝড়ে। চারটি কক্ষ মেরামত হলেও এখনও দুটি কক্ষে পাঠদান হয় না । এতে প্রতিদিন ব্যাহত হচ্ছে ৪ শত শিক্ষার্থীর ক্লাস । এমনই অবস্থা ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌর এলাকার বৈঁচিতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির ।
জান যায়, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পৌরসভা এলাকার বৈঁচিতলা গ্রামে ৪ একর জমির উপর ১৯৬৮ সালে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী কিছু ব্যক্তি এলাকার ছেলে-মেয়ের শিক্ষার কথা চিন্তা করে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহেশপুর-বেগমপুর সড়কের ধার ঘেঁষে বিশাল এলাকা জুড়ে বৈঁচিতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে ক্লাস চলছে। বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের ছাদের ভবনটির তিনটি কক্ষের একটি শিক্ষক মিলনায়তন, বাকি দুইটিতে ক্লাস চলছে। আর উত্তর পাশের টিনসেড ভবনের ৬ টি কক্ষের তিনটিতে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বাকি তিনটি কক্ষের একটিতে প্রধান শিক্ষক অপর দুইটির চাল শূন্য অবস্থায় রয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক আছেন ১০ জন, আর কর্মচারী ১ জন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওয়ায়েজ উদ্দিন জানান, তাদের এই প্রতিষ্ঠাটি অনেক পুরানো। তাছাড়া মহেশপুর পৌরসভা এলাকায় বালক-বালিকা মিলিয়ে ৫ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে বৈঁচিতলা একটি। তারা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কষ্ট করে ছেলে-মেয়েদের পাঠদান করে আসছেন। সব সময় তাদের শ্রেণীকক্ষ সংকট রয়েছে। এই অবস্থায় ২০২০ সালে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর তিনকক্ষের একটি একতলা ভবন তৈরি করে দেন। আর তারা নিজেরা জোড়াতালি দিয়ে ছয়টি কক্ষের একটি টিনসেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। যা কখনও ভেঙ্গে পড়ে, কখনও মেরামত হয়। এভাবে কষ্ট করেই চালাতে থাকেন প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালের ২০ মে আম্পান ঝড়ে ছয় কক্ষের টিনসেডের ওই ঘরটির সম্পূর্ণ চাল উড়ে যায়। ঘরের টিনগুলো গাছের ডালে পাশে ক্ষেতের মধ্যে পড়ে ছিল। যা ভেঙ্গেচুরে নষ্ট হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তারা প্রতিষ্ঠানটি পাঠদান উপযোগী করতে ৩ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে চারটি কক্ষ মেরামত করে নিয়েছেন। উপরে টিন দিয়ে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়েছে। এই কাজে শিক্ষকরা, প্রতিষ্ঠানের পুরাতন ছাত্ররা টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। দুই কক্ষ মেরামত করতে প্রায় ২ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানান। যা বিদ্যালয়টির পক্ষে জোগাড় করা কোনো ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।
মহেশপুর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বৈঁচিতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওয়ায়েজ উদ্দিন আরও জানান, ছেলে-মেয়েদের এই কষ্টের কথা চিন্তা করে তিনি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার আবেদন দিয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, মূলত টাকা না থাকায় আম্পানে উড়ে যাওয়া টিনের চাল মেরামত করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল জানান, আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ ভবন এখনও ভালো হয়নি বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।